নাজাসাত এর বিধি-বিধান

19920

নাজাসাতের আভিধানিক অর্থ

নোংরা ময়লা

শরয়ী পরিভাষায় নাজাসাত

এমন নোংরা-ময়লা যা দূর করার জন্য শরীয়তে নির্দেশ এসেছে

নাজাসাতের প্রকারভেদ

১- মানুষের পেশাব ও মল

এক বেদুইন ব্যক্তি মসজিদে পেশাব করে দিলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বলেছিলেন, ‘এ সকল মসজিদ পেশাব ও নোংরা-ময়লার স্থান নয়। মসজিদ হলো আল্লাহ তাআলার যিকির, নামাজ ও কুরআন তেলাওয়াতের স্থান।’
(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

২- রক্ত

হাদীসে এসেছে, খাওলা বিনতে ইয়াসার রাযি. নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন ইয়া রাসূলুল্লাহ, ‘আমার মাত্র একটি কাপড়, আমি ঋতুগ্রস্ত অবস্থায় তাই পরি। তিনি বললেন, ‘যখন তুমি পবিত্র হবে তখন রক্তের স্থান ধুয়ে ফেলবে। এরপর সেই কাপড় পরে নামাজ আদায় করবে।’(বর্ণনায় আবু দাউদ)

কোনো কোনো ইমামের মতে শুধু মাসিকের রক্ত নাপাক। অন্যান্য রক্ত পবিত্র, প্রবাহিত রক্ত হোক বা অপ্রবাহিত। কারণ, হাদীসে এসেছে ‘এক মুসলিম ব্যক্তি নামাজে থাকাকালে এক কাফের ব্যক্তি তার গায়ে তীর নিক্ষেপ করল। মুসলিম ব্যক্তি তার শরীর থেকে তীর উঠিয়ে ফেলল ও নামাজ চালিয়ে গেল, যদিও তার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিল।’(বর্ণনায় আবু দাউদ)

৩- যেসকল জন্তু খাওয়া যায় না তার পেশাব-পায়খানা

হাদীসে এসেছে, ইবনে মাসউদ রাযি. বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পায়খানায় গেলেন এবং আমাকে তিনটি পাথর নিয়ে যেতে বললেন। আমি দুটো পাথর পেলাম, তৃতীয় পাথর খোঁজ করেও পেলাম না। তখন আমি শুকনো গোবর নিলাম। এগুলো নিয়ে তাঁর কাছে গেলাম। তিনি পাথর দুটো নিলেন আর গোবর ফেলে দিলেন আর বললেন, এটা অপবিত্র।’
(বর্ণনায় বুখারী)

যেসব জন্তু খাওয়া যায় তার পেশাবের হুকুম কি?

যেসকল জন্তু খাওয়া যায় বহু সংখ্যক আলেমের মতানুসারে তার পেশাব পবিত্র। তাদের প্রমাণ আনাস ইবনে মালেক রাযি. আনহুর বর্ণনা যে, কিছু সংখ্যক লোক মদীনায় এল। তারা রোগ্রাক্রান্ত হয়ে পড়ল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের সদকার উটের কাছে পাঠালেন, যাতে তারা উটের দুধ ও পেশাব পান করতে পারে।

অবশ্য হানাফী মাযহাব মতে, ঘোড়া ও যে সকল জন্তু খাওয়া হয়, তার পেশাব লঘু নাপাক। যদি তা পরিমাণে বেশি না হয়, তাহলে তা ক্ষমাযোগ্য। যদি তা পোশাক বা শরীরের এক চতুর্থাংশ হয় তাহলে পরিমাণে বেশি বলে গণ্য হবে ।(বর্ণনায় বুখারী)

৪- মৃত প্রাণী

আর তা হলো, যা শরয়ী পদ্ধতিতে যবেহ ব্যতীত মারা যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন,

(قُل لَّآ أَجِدُ فِي مَآ أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَىٰ طَاعِمٖ يَطۡعَمُهُۥٓ إِلَّآ أَن يَكُونَ مَيۡتَةً أَوۡ دَمٗا مَّسۡفُوحًا أَوۡ لَحۡمَ خِنزِيرٖ فَإِنَّهُۥ رِجۡسٌ )

{বল, ‘আমার নিকট যে ওহী পাঠানো হয়, তাতে আমি আহারকারীর ওপর কোনো হারাম পাই না, যা সে আহার করে। তবে যদি মৃত কিংবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের গোশত হয়- কারণ, নিশ্চয় তা অপবিত্র।}[সূরা আল আনআম : ১৪৫]

জীবিত অবস্থায় যদি পশুর কোনো অংশ কেটে আলাদা করা হয়, তা মৃত জন্তু বলে গণ্য হবে।

তবে এর ব্যতিক্রম হলো:

১-মৃত মাছ ও ফড়িং।

কারণ, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমাদের জন্য দুটো মৃত প্রাণী ও দুটো রক্ত হালাল করা হয়েছে। মৃত প্রাণী দুটো হলো, মাছ ও ফড়িং। আর রক্ত দুটো হলো, কলিজা ও প্লীহা।’(বর্ণনায় আহমদ)

২- এমন মৃত প্রাণী যার তরল রক্ত নেই, যেমন মাছি।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি তোমাদের কারো পাত্রে মাছি পতিত হয়, তাহলে তাকে তাতে ডুবিয়ে দাও। কেননা তার এক ডানায় আরোগ্য ও অন্য ডানায় রোগ থাকে।’(বর্ণনায় বুখারী)

৫- শূকরের গোশত

আল্লাহ তাআলা বলেন,

(قُل لَّآ أَجِدُ فِي مَآ أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَىٰ طَاعِمٖ يَطۡعَمُهُۥٓ إِلَّآ أَن يَكُونَ مَيۡتَةً أَوۡ دَمٗا مَّسۡفُوحًا أَوۡ لَحۡمَ خِنزِيرٖ فَإِنَّهُۥ رِجۡسٌ )

{বল, ‘আমার নিকট যে ওহী পাঠানো হয়, তাতে আমি আহারকারীর ওপর কোনো হারাম পাই না, যা সে আহার করে। তবে যদি মৃত কিংবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের গোশত হয়- কারণ, নিশ্চয় তা অপবিত্র।}
[সূরা আল আনআম : ১৪৫]

৬- কুকুর

কুকুরের সবকিছুই নাপাক। আর তার মুখের লালা হলো জঘন্য নাপাক। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি তোমাদের কারো পাত্রে কুকুর মুখ লাগায় তাহলে তা পবিত্রকরণের মাধ্যম হলো, সাতবার ধৌত করা। প্রথমবার মাটি দ্বারা।’(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

কুকুরের মুখ লাগানোর অর্থ হলো, কুকুর তার জিহ্বা পাত্রে ঢুকিয়ে নাড়াচাড়া করা, সে পাত্র থেকে পান করুক বা না করুক।

৭- মযী বা কামরস

আর তা হলো, স্বচ্ছ, পাতলা, পিচ্ছিল পানি, যা যৌন উত্তেজনার শুরুতে বের হয় কিন্তু চরম পুলক অনুভব হয় না, তীব্র বেগে বের হয় না ও বের হওয়ার পর কোনো ক্লান্তি আসে না। অনেক সময় এ পানি বের হওয়ার বিষয়টি অনুভব করা যায় না।আলী ইবনে

আবি তালেব রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যখন তিনি কামরস সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন তিনি বলেছেন, ‘অজু করো আর পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেল।’
(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

৮- ওদী বা অনাকাঙ্খিত বীর্য

আর তা হলো, ঘন সাদা পানি, যা পেশাবের পর বের হয়।

বীর্যের পবিত্রতা ও অপবিত্রতা প্রসংগ

বীর্য: ঘন সাদা পচা ডিমের ন্যায় গন্ধযুক্ত পদার্থ যা চরম উত্তেজনার সময় প্রবল বেগে বের হয় আর বের হওয়ার পর ক্লান্তি অনুভূত হয়।ইমাম আবু হানিফা র: এর মতে বীর্য নাপাক।

মদ ও মাদকদ্রব্য দিয়ে তৈরি সুগন্ধি

আলেমদের অনেকের মত হলো, মদ বাহ্যিক অর্থে হোক বা অন্তরগত, সর্বাবস্থায় নাপাক। অপরদিকে অন্যএক দল আলেমের প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত হলো, বাহ্যিকভাবে মদ পবিত্র ; অন্তরগত অর্থে তা অপবিত্র এবং তা পান করা কবীরা গুণাহ হওয়া সত্ত্বেও ।

তারা আল্লাহ তাআলার নিম্নোক্ত বাণীতে মদকে অন্তরগত অপবিত্রতার অর্থে নিয়েছেন, জুয়া ও প্রতিমা-বেদীর মতোই। আল্লাহ তাআলা বলেন,

(يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ إِنَّمَا ٱلۡخَمۡرُ وَٱلۡمَيۡسِرُ وَٱلۡأَنصَابُ وَٱلۡأَزۡلَٰمُ رِجۡسٞ مِّنۡ عَمَلِ ٱلشَّيۡطَٰنِ فَٱجۡتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمۡ تُفۡلِحُونَ ٩٠ )

{হে মুমিনগণ, নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক, শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।} [সূরা আল মায়েদা : ৯০]

এ মতের ওপর ভিত্তি করে বলা যায়, যেসকল সুগন্ধিদ্রব্য মাদক বা এলকোহল দিয়ে তৈরি করা হয়, শরীয়তের দৃষ্টিতে তার ব্যবহার জায়েয।

নাজাসাত পবিত্র করার পদ্ধতি

১- জমিনে লেগে-থাকা নাজাসাত পবিত্র করার পদ্ধতি

যখন জমিনে কোনো নাজাসাত লেগে যায় তখন পানি বা অন্যকিছু দিয়ে তা দূর করা হবে। এর প্রমাণ, যে বেদুইন লোকটি মসজিদে পেশাব করেছিল তার সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তাকে ছেড়ে দাও আর তার পেশাবের ওপর এক পূর্ণ-বালতি বা এক পূর্ণঢোল পানি ঢেলে দাও।’
(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

আর নাজাসাত যদি তরল হয়, তবে তা শুকিয়ে গেলে জমিন পাক হয়ে যায়। আবু কিলাবাহ রাযি. থেকে বর্ণিত,‘যদি জমিন শুকিয়ে যায় তাহলে তা পবিত্র হয়ে যায়।’(বর্ণনায় বুখারী)

২- নাজাসাতযুক্ত পানি পবিত্র করা

যদি নাজাসাতযুক্ত পানির সাথে অধিক পরিমাণে পানি মিশে যাওয়ার ফলে নাজাসাতের প্রভাব চলে যায় তাহলে পানি পবিত্র হয়ে যায়। এমনিভাবে বর্তমান সময়ে বিভিন্ন আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পানি বিশুদ্ধ করা হয়, এ প্রক্রিয়াতেও পানি পবিত্র হয়ে যাবে।‎‎

৩- নাজাসাতযুক্ত কাপড় পবিত্র করা

নাজাসাতযুক্ত কাপড় পানি দিয়ে ধুইতে হবে, খুঁচিয়ে তুলে ফেলতে হবে ও নিংড়াতে হবে যাতে নাজাসাত দূর হয়ে যায়।

৪- বিছানা-কার্পেট পবিত্র করা

বিছানা-কার্পেট ইত্যাদি পানি দিয়ে ধুইতে হবে অথবা আধুনিক ক্লিনিং যন্ত্রপাতি দিয়ে পরিষ্কার করতে ও খুঁচিয়ে তুলে ফেলতে হবে, যাতে নাজাসাত দূর হয়ে যায়।

৫- মৃত জন্তুর চামড়া পবিত্র করা

১- গোশত খাওয়া যায় এমন মৃত প্রাণীর চামড়া পবিত্র করার পদ্ধতি

এ ধরনের চামড়া দাবাগাত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পবিত্র করা যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন

‘যখন চামড়া দাবাগাত করা হয়, তখন পবিত্র হয়ে যায়।’
(বর্ণনায় মুসলিম)

দাবাগাত হলো: কোনো কিছু দিয়ে চামড়া এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত করা যাতে তা নরম ও দুর্গন্ধমুক্ত হয়ে যায়। আর যদি গোশত খাওয়া যায় এমন প্রাণী মৃত না হয় বরং শরীয়তসম্মত উপায়ে যবাইকৃত হয় তবে তার চামড়া পবিত্র ।

২- গোশত খাওয়া যায় না এমন মৃত প্রাণীর চামড়া পবিত্রকরণ

এ প্রকৃতির প্রাণী ও মৃত প্রাণী একই হুকুমের আওতাভুক্ত। অর্থাৎ তা এমন নাজাসাত যা পবিত্র করা যায় না। যদি প্রাণীটি শরয়ী পদ্ধতিতে যবেহ করা হয় তবুও।

৬- দুগ্ধপোষ্য মেয়ে ও পুত্র সন্তানের পেশাব থেকে পবিত্রতা অর্জন

দুগ্ধপোষ্য মেয়ের পেশাব ধুয়ে ফেলতে হবে আর পুত্রের পেশাবে পানির ছিটা দিলেই চলবে। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

‘কন্যা সন্তানের পেশাব ধুয়ে ফেলা হবে আর পুত্রসন্তানের পেশাবের ওপর পানির ছিটা দিতে হবে।’(বর্ণনায় আবু দাউদ)

৭- কুকুর যে পাত্রে মুখ দিয়েছে তা পবিত্রকরণ

সাতবার ধুইতে হবে, প্রথমবার মাটি দিয়ে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের কারো পাত্রে যদি কুকুর মুখ দেয় তাহলে তা সাতবার ধুইতে হবে, প্রথমবার মাটি দিয়ে।’(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

৮-মযী বা কামরস ও ওদী বা অনাকাঙ্খিত বীর্য থেকে পবিত্রতা অর্জন

এ অবস্থায় পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেলে অজু করতে হবে। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলী ইবনে আবু তালেব রাযি. কে বলেছেন, ‘অজু করো আর তোমার পুরুষাঙ্গ ধুয়ে ফেল।’
(বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)

আর কাপড়ের ব্যাপারে কথা হলো, যেখানে মযী বা ওদী লেগেছে সে স্থানে পানির ছিটা দিতে হবে। কারণ, সাহল ইবনে হানীফ রাযি. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে, তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে প্রশ্ন করে বলেছেন,‘ইয়া রাসূলুল্লাহ, যদি আমার কাপড়ে এগুলো লেগে যায় তাহলে আমি কি করব? তিনি বললেন, তুমি হাতের তালুতে পানি নিয়ে তোমার কাপড়ের সেই স্থানে লাগাবে যেখানে তুমি দেখতে পাও উহা লেগেছে।’
(বর্ণনায় আবু দাউদ)

৯- মাসিকের রক্ত থেকে পবিত্রতা অর্জন

মাসিকের রক্ত পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ধুয়ে ফেলার পর যদি রং অবশিষ্ট থাকে তবে কোনো ক্ষতি নেই। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পানি তোমার জন্য যথেষ্ট আর তার রং অবশিষ্ট থাকলে ক্ষতি নেই।’(বর্ণনায় আবু দাউদ)

১০- জুতা পবিত্র করা

জুতা মাটির সাথে ঘষতে হবে যেন নাজাসাতের আলামত চলে যায়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি তোমাদের কেউ তার জুতো দিয়ে নাজাসাত মাড়ায় তাহলে মাটি হলো তার পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম।’(বর্ণনায় আবু দাউদ)

১১- মেয়েদের মাটি পর্যন্ত ঝুলে-পড়া পোশাক পবিত্র করা

যদি মেয়েদের ঝুলে পড়া আঁচলে নাজাসাত লেগে যায়, তাহলে পবিত্র স্থান দিয়ে হেঁটে যাওয়া পবিত্রতার জন্য যথেষ্ট। পবিত্র জমিন ওটাকে পাক করে দেবে। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তার পরের পথ তাকে পবিত্র করে দেবে।’(বর্ণনায় আবু দাউদ)

১২- জমে যাওয়া খাদ্যদ্রব্য পবিত্র করা

নাজাসাত ও তার আশপাশের অংশ ফেলে দিয়ে এ জাতীয় খাদ্যদ্রব্য পবিত্র করা যায়। আর যা অবশিষ্ট থাকবে তা পবিত্র হিসাবে থেকে যাবে। এর প্রমাণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ঘি এর মধ্যে ইঁদুর পতিত হওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছেন, ‘ওটা এবং ওর আশপাশের ঘি ফেলে দাও আর বাকিটা রেখে দাও। এরপর তোমরা তোমাদের ঘি খেয়ে নাও।’(বর্ণনায় বুখারী)

১৩- মসৃণ স্থান পবিত্র করা যেমন আয়না ও কাঁচ

এসব জিনিস মাসেহ করা হবে যেন নাজাসাতের আলামত চলে যায়

নাজাসাত সম্পর্কে কিছু মাসায়েল

- নাজাসাত সম্পর্কে কিছু মাসায়েল

- যেকোনো বস্তুর মৌলিক গুণ হলো পবিত্র হওয়া। যতক্ষণ না তাতে নাজাসাতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়।

- যদি কোনো বস্তুতে নাজাসাত লেগে যায় কিন্তু তার স্থান জানা না থাকে, তাহলে পুরোটাই ধুয়ে ফেলতে হবে।

- যদি কোনো নাজাসাত অন্য বস্তুতে পরিণত হয় - যেমন গাধার গোবর পুড়ে ছাই হয়ে গেল- তাহলে তা পবিত্র বলে গণ্য হবে।



Tags: